ফরিদপুরের ভাঙ্গা হাইওয়ে থানা পুলিশের সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যের শেষ বাক্য ব্যাপক আলোচিত হচ্ছে। ওই দুই লাইনে লেখা ছিল, ‘হাইওয়ে থানা পুলিশ ব্যতীত অন্য কোনো সংগঠন বা ব্যক্তি মহাসড়কে চাঁদাবাজি করলে তার দায়-দায়িত্ব হাইওয়ে পুলিশ নেবে না’। তবে এটাকে ‘ভাষাগত ভুল’ বলেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)।
বিভিন্ন অনিয়ম ও চাঁদাবাজির অভিযোগে বুধবার (৬ এপ্রিল) রাতে ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলমকে প্রত্যাহার করা হয়। সেই সঙ্গে এ এস এম আসাদুজ্জামানকে নতুন ওসি হিসেবে দায়িত্বভার দেওয়া হয়।
দায়িত্ব নেওয়ার আগেই নবাগত ওসি এ এস এম আসাদুজ্জামান বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) সকালে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ওসির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নবাগত ওসি।
লিখিত বক্তব্যের শুরুতে তিনি বলেন, ‘এর আগে থানার ওসির দায়িত্বে থেকে যারা বিভিন্ন পরিবহন, ব্যানার, টোকেন বা মান্থলি বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বা তাদের নামের উৎকোচ আদায় হতো, আজ থেকে বন্ধ বলে ঘোষণা করছি। যদি অত্র থানার কোনো পুলিশ সদস্য এর সঙ্গে জড়িত থাকেন তাহলে তার দায়-দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হবে।’
ওসি আরও বলেন, ‘মহাসড়কে কোনো চাঁদাবাজি চলবে না বলে অঙ্গীকার করছি। তবে বেপরোয়া গতি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যতীত মোটরযান চালানো বা মোটরসাইকেলে হেলমেট ব্যতীত তিনজন আরোহী ও অবৈধ থ্রি হুইলারের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
শেষ দুই লাইনে লেখা ছিল, ‘হাইওয়ে থানা পুলিশ ব্যতীত অন্য কোনো সংগঠন বা ব্যক্তি মহাসড়কে চাঁদাবাজি করলে তার দায়-দায়িত্ব হাইওয়ে পুলিশ নেবে না’।
বিষয়টি নিয়ে সংবাদকর্মী ও এলাকাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। অনেকেই এ বিষয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেন।
এ ব্যাপারে ওসি এ এসএম আসাদুজ্জামানের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ভেল্কি নিউজকে বলেন, ‘আপনারা একটু ঠিক করে নিয়েন। ভুল হতে পারে। হয়তো ভাষাগত ভুল হয়েছে।’
এ বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশ সুপার মো. হামিদুল আলম বলেন, ‘আগের ওসি জাহাঙ্গীর আলমকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তার স্থলে এ এস এম আসাদুজ্জামানকে দায়িত্ব নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি এখনো দায়িত্বভার বুঝে নেননি। কী কারণে নবাগত ওসি সংবাদ সম্মেলন করলেন তা বিস্তারিত জেনে জানানো হবে।’
এদিকে ফরিদপুরের মাদারীপুর হাইওয়ে রেঞ্জের প্রধান কার্যালয়ে বিকেল ৩টায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে মাদারীপুর রিজিয়নের হাইওয়ে পুলিশ সুপার হামিদুল আলম বলেন, মহাসড়ক হবে অধিক নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও হয়রানিমুক্ত।
তিনি আরও বলেন, ‘মহাসড়কের যে কথাটি উঠে এসেছে সে বিষয়ে আমি গর্ব করে বলতে পারি এ ধরনের কোনো চাদাঁবাজি আমার রিজিয়নে ঘটার সুযোগ নেই। আর এমন কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে আমি তার বিরুদ্ধে সরাসরি চাঁদাবাজির মামলা করবো। কোনো রকম ছাড় দেওয়া হবে না।’