মুসলিম উম্মাহর জন্য বিশেষ দিন জুমা। তা যদি হয় রমজানে তবে এর মর্যাদা আরও বেশি। জুমার ইবাদত, রমজানের রোজা পালন এসবই মুমিন মুসলমানের জন্য গুনাহের কাফফারা। হাদিসে পাকে এসেছে-
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা থেকে অপর জুমা, এক রমজান থেকে অপর রমজান মধ্যবর্তী সময়ের জন্য গুনাহ থেকে কাফফারাস্বরূপ। যদি কবিরা গুনাহ থেকে বিরত থাকা হয়। মুসলিম
জুমার নামাজ পড়লে বান্দার গুনাহ মাফ হয়। আবার জুমার দিন সহজ আমলে মিলবে সওয়াব ও গুনাহ থেকে মুক্তি সুযোগ। এ প্রসঙ্গে নবিজী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম সহজ আমলের কথা ঘোষণা করেছেন-
১. হজরত আবু হুরায়রারা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমরূপে ওজু করে জুমার নামাজ পড়তে আসে। মনোযোগের সঙ্গে খুতবা শোনে এবং নিরব থাকে। তখন থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত এবং অতিরিক্ত আরও তিন দিনের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। যে ব্যক্তি অহেতুক কংকর স্পর্শ করলো, সে অনর্থক কাজ করলো।’ মুসলিম
হাদিসে কংকর স্পর্শ করা, অযথা কথা বলার মর্মার্থ হলো, খুতবায় মনোযোগ নষ্ট করে এমন কাজ করা। আর অনর্থক কাজ করার মর্মার্থ হলো ওই ব্যক্তি জুমার নামাজের বিশেষ সওয়াব থেকে বঞ্চিত হওয়া এবং সাধারণ জোহরের নামাজ আদায়ের সওয়াব পাওয়া।
জুআর দিনে এমন কিছু সহজ আমল রয়েছে, যেসব আমলে গুনাহ মাফের ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্বনবি। হাদিসে এক বর্ণনায় তা সুস্পষ্টভাবে ওঠে এসেছে-
২. হজরত সালমান ফারসি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে এবং যথাসম্ভব উত্তমরূপে অজু পবিত্রতা অর্জন করে; এরপর শরীরে তেল মেখে নেয় অথবা সুগন্ধি ব্যবহার করে; তারপর মসজিদে যায়, আর দুই জনের মধ্যে ফাঁক না করে এবং তার ভাগ্যে নির্ধারিত পরিমাণ নামাজ আদায় করে। আর ইমাম যখন খুতবার জন্য বের হন তখন চুপ থাকে। তার এ জুমা থেকে পরবর্তী জুমার মধ্যবর্তী সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। ইবনে মাজাহ
জুমা ও রমজান গুনাহের কাফফারা এবংবিশেষ সওয়াব পাওয়ার উপায়। তাই হাদিসের দিকনির্দেশনা মোতাবেক আগে আগে জুমার প্রস্তুতি নিয়ে হাদিসে বর্ণিত সহজ আমলগুলো বাস্তবায়নে মসজিদে উপস্থিত হওয়া জরুরি।
মহান আল্লাহ বান্দার জন্য খুবই দয়াবান। তিনিই বান্দার গুনাহ মাফ করে দিতে দিন-ক্ষণ ও সময় নির্ধারণ করে দিয়ে সহজ আমলের সুযোগ দেন। যার বিনিময়ে বান্দা সহজে গুনাহমুক্ত হতে পারে। পেতে পারে ফজিলতপূর্ণ সওয়াব ও মর্যাদা।
সুতরাং হাদিসের ঘোষণা অনুযায়ী রহমতরে বার্তাবাহী মাস রমজানের জুমার নামাজের উদ্দেশ্যে গোসল, পবিত্রতা অর্জন, প্রসাধনী ব্যবহার করে মসজিদে গিয়ে খুতবা শোনা, অনর্থক কাজ না করে জুমা আদায় করা। আর তাতে মহান আল্লাহ বান্দাকে ক্ষমা করে দেবেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজানের রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাত পতে হাদিসের নির্দেশনা মেনে চলার তাওফিক দান করুন। নিজেদের জীবনের গোনাহ থেকে মুক্ত হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।