ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের বুচা শহর যেন এক মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। ভয়াবহ হামলার জলজ্যান্ত স্বাক্ষর রেখে গেছে রুশ বাহিনী। রাস্তার উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে লাশ। পচা দুর্গন্ধে ক্রমে বাতাস ভারী হচ্ছে। প্রায় জনমানবহীন শহর। চারদিকে গোলাবারুদের দগদগে ক্ষত।
শহরের মেয়র অ্যানাতোলি ফেদোরুক সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে জানিয়েছেন, নির্বিচারে হত্যালীলা চালিয়েছে পুতিনবাহিনী। ইতোমধ্যেই ২৮০ জনকে কবর দেয়া হয়েছে। শহরের বিভিন্ন নড়কে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে আরো বহু মানুষের লাশ। মৃতদের অধিকাংশই সাধারণ নাগরিক। রুশ হামলায় মৃতদের ভিড়ে শিশু, কিশোরও রয়েছে বলে দাবি করেন ফেদোরুক।
কোথাও দেখা গিয়েছে একটি গাড়ির ভেতরই পুরো পরিবারের নিথর দেহ, গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে আছে। সম্ভবত পালানোর চেষ্টা করছিল পরিবারটি। কিন্তু রুশ বাহিনীর বুলেট তাদের দেহকে ছিন্নভিন্ন করেছে।
ফেদোরুক জনান, রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকা নিহত ব্যক্তিদের হাতে সাদা ব্যান্ডেজ বাঁধা ছিল। তারা যে নিরস্ত্র, রুশ বাহিনীকে সেই বার্তা দিয়ে নির্বিঘ্নে শহর ছেড়ে চলে যেতে চেয়েছিলেন। রুশ বাহিনীও সেই ব্যান্ডেজ বাঁধার অর্থ বুঝেছিল। কিন্তু রেহাই দেয়নি। দেহগুলির মাথার পিছনে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। ফেদোরুকের দাবি, রুশ বাহিনী নিরস্ত্র নাগরিকদের পিছন থেকে গুলি করে মেরেছে।
বুচা শহরের মেয়র আরো জানান, বহু ইউক্রেনীয় বুচাঙ্কা নদী পেরিয়ে ইউক্রেন সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকায় পালানোর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু রুশ বাহিনীর হামলায় সেই নদী পেরিয়ে জীবন রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
বুচা’র যেদিকেই তাকানো যায়, একই চিত্র চোখে পড়ে। কিন্তু যুদ্ধের কবলে পড়ে শহরটির কত মানুষ নিহত হয়েছে সেটি এখনো স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন শহরের মেয়র ফেদোরুক।
সূত্র : আনন্দবাজার