নির্বাচন কমিশন গঠনে সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপ। প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে সংলাপ শুরু হচ্ছে। আওয়ামী লীগ এই সংলাপকে সাধুবাদ জানিয়েছে। তবে উল্টো মত বিএনপির। দলটি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে বসবে না।
আগামীকাল সোমবার বিকেল ৪টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে বসবে জাতীয় পার্টি। বুধবার জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সংলাপে অংশ নেবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি। তার আগেই নতুন ইসি নিয়োগ দিতে হবে রাষ্ট্রপতিকে।
নতুন ইসি নিয়োগের অংশ হিসেবে সার্চ কমিটি গঠনে সোমবার থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসতে যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি।
ইসি গঠনে স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরেও আইন না হওয়ায় প্রতিবারই রাজনৈতিক অঙ্গনে মতভেদ তৈরি হয়। জটিলতা এড়াতে গত দুবার সার্চ কমিটির মাধ্যমে ইসি গঠন হলেও বিতর্ক থামেনি।
বিএনপি এরই মধ্যে রাষ্ট্রপতির এই সংলাপ বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপি বলছে এই সংলাপ লোক দেখানো।
এই সংলাপের ফল নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে নাগরিক প্রতিনিধিদের মধ্যে। তাদের কেউ কেউ কোনো আশাবাদ প্রকাশে রাজি নন। কেউ আবার বলছেন, এর ফলে কাঙ্ক্ষিত পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে।
রাষ্ট্রপতি নতুন কমিশন যাদের দিয়ে গঠন করবেন, তাদের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
ইসি গঠনে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের মতো মো. আবদুল হামিদও একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আসছেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দল এখন ৩৯টি।
বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠনে ২০১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর বিএনপির সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে সংলাপ শুরু করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এক মাস ধরে ৩১টি দলের সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি। তবে এবাররো ৩১টি দলের সঙ্গেই সংলাপ হবে। সেক্ষেত্রে একাধিক দল নিয়ে একই দিনে সংলাপ করতে পারেন রাষ্ট্রপতি।
এরই মধ্যে বঙ্গভবন থেকে জাতীয় পার্টি ছাড়াও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলকে (জাসদ) নতুন ইসি গঠনে সংলাপের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনে বর্তমানে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৩৯টি। এর আগেরবার ৩১টি রাজনৈতিক দলকে সংলাপে ডেকেছিলেন রাষ্ট্রপতি। বিএনপির অনাগ্রহের কারণে তাদের নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিকরা এই সংলাপে অংশ নেবে কিনা, তা অনিশ্চিত। এ ক্ষেত্রে বিএনপি ছাড়া মাত্র তিনটি দলের নিবন্ধন রয়েছে।
অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের মধ্যে আটটি দল নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত। অবশ্য সংলাপে নিবন্ধিত সব দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে কিনা বা সংসদে প্রতিনিধিত্বশীল দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হবে কিনা, তাও এখনও নিশ্চিত হয়নি।
বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির। তবে সুনির্দিষ্ট আইনের মাধ্যমে তা গঠনের কথা থাকলেও সেই আইন এখনো প্রণীত হয়নি। এ নিয়ে দেশের সুশীল সমাজসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আইন প্রণয়নের প্রতি জোর দিয়ে আসছে।