ডিজেলসহ সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার প্রতিবাদে সারাদেশে দুইদিনের ধর্মঘট চলছে। শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সকাল থেকে শুরু হয় এই ধর্মঘট।
সকাল থেকে ছোট ছোট যান বিশেষ করে সিএনজি, রিকশা ও মোটরসাইকেল চলতে দেখা যায়। গণপরিবহ না চলার সুযোগে জরুরি কাজে বের হওয়া মানুষের পকেট কাটছে তারা। নিরুপায় হয়ে অনেকে বেশি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন; আবার অনেক জায়গায় তাদের সঙ্গে হচ্ছে বচসাও।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিশেষ করে রিকশা আর বাইকার স্বাভাবিক ভাড়ার চাইতে তিনগুণ বা চারগুণ বেশি ভাড়া নিচ্ছেন।
মিরপুর-১২ নম্বর বাসস্ট্যান্ড থেকে সদরঘাট যাওয়ার জন্য আরিফুর রহমান নামে এক ব্যবসায়ী বাইকের ভাড়া জিজ্ঞাসা করেন। বাইকার ওই ব্যক্তির কাছে ৬৫০ টাকা ভাড়া দাবি করেন। বাইকারের এমন ভাড়া দাবির বিষয়ে তিনি অবাক হয়ে যান।
আরিফুর রহমান জানান, সদরঘাট যেতে এক ঘণ্টাও লাগবে না। উনি ২০০-৩০০ টাকা চাইতে পারেন। ৬৫০ টাকা চান কীভাবে চান।
ভুক্তভোগীরা জানান, রিকশাচালক আর বাইকারদের এমন ভাড়া চাওয়া বিরল ঘটনা। যেখানকার ভাড়া ৫০ টাকা চাওয়া হচ্ছে ১৫০ টাকা আবার কখনো ২০০ টাকা। আর বাইকের ভাড়া যেখানে ২০০ সেখানে চাওয়া হচ্ছে ৫০০ এর উপরে।
ট্রাক ও পণ্যবাহী পরিবহনের মালিকরা ধর্মঘটের ডাক দিলেও বৃহস্পতিবার (০৪ নভেম্বর) সারাদিন বাস ধর্মঘটের বিষয়টি ধোয়াঁশায় ছিল। তবে রাতে এ বিষয়টি পরিষ্কার করে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। সংগঠনটি জানায়, পণ্যবাহী যানের পাশাপাশি শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে বাস চালাবেন না মালিকরা।
তবে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্মঘটের ডাক দেয়নি। বৃহস্পতিবার রাতে সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, পরিবহন মালিকরা গাড়ি চালাবেন না। তাদের সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে। আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা না দিলেও গাড়ি বন্ধ থাকবে শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে।
একই সুরে কথা বলেন, বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েনের সহ-সাধারণ সম্পাদক রাকেশ ঘোষ। তিনি বলেন, শুক্রবার সকাল থেকে সারাদেশে পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকবে। আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে ধর্মঘটের ঘোষণা দিইনি। কিন্তু মালিকরা গাড়ি চালাবেন না।
বুধবার মধ্যরাত থেকে ডিজেলের মূল্য লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। নতুন মূল্য কার্যকর হওয়ার পর বৃহস্পতিবার সভা করেছে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন।
অতিরিক্ত দামে ডিজেল কিনে পরিবহন চালাতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন মালিকরা। সেক্ষেত্রে ভাড়া সমন্বয়ের দাবি ওঠে। ডিজেলের দাম কমানো, নতুবা ভাড়া সমন্বয়ের দাবি ওঠে সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে। দাবি পূরণ না হলে পরিবহন চালানো সম্ভব নয় বলে জানান তারা। তাদের সঙ্গে একমত হন পরিবহন শ্রমিক নেতারা।